Monday, April 15, 2013

নববর্ষ ও কিছু খেজুরে আলাপ

আপনি যাই বলুন না কেন,শুভ নববর্ষ বলার চেয়ে হ্যাপি নিউ ইয়ার বলার সময় আপনাকে বেশিই স্মার্ট দেখায়,দেখায় কিনা? না না,সত্যি বলুন,বিদেশী ভাষায় বলার মধ্যে একটা বেশ ইয়ে আছে,ব্যাপারটা বোঝার আছে।ফালতু বস্তাপচা সেন্টু খেয়ে কোন লাভ আছে বলুন?

আমার তো বেশ মনে পড়ে,ছোটবেলায় পয়লা বৈশাখ বেশ ভোর ভোর ঘুম থেকে উঠে পড়তুম।দাদুর কড়া আদেশ,অন্তত ওদিন বেশিক্ষণ ঘুমানো চলবে না।বাড়িরই উঠনে জড়ো করা থাকবে ,পুরোন কাগজ পত্র,জঞ্জাল,শুকনো পাতা,ফুলও।আর তারপর সবাই গোল করে ঘিরে দাড়িয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হবে।দেখতে দেখতে,গল গল করে সাদা কালো বিচিত্র গন্ধ-বর্ণ মাখা সেই ধোঁয়া কুণ্ডলী পাকিয়ে উড়ে যাবে ওপরে,আরো ওপরে ।আর দাদু বলে উঠবে,"গত বছরের সব ব্যাথা-যন্ত্রনা-পাপ-তাপ-শাপ ধুয়ে মুছে যাক,এ বছর নিয়ে আসুক আনন্দ,সবার জন্য"। 

তারপর যে দিন তা শুরু হত,উফফ,খালি এর বাড়ি -তার বাড়ি খেতে দুপুর ফুরিয়ে বিকেল।সন্ধ্যে বেলা গুচ্ছ দোকান থেকে নেমন্তন্ন।কিন্তু সব গুলোয় ত যাব না,কালেন্ডার আর মিস্টির প্যাকেট ত সবাই দেবে,বরফ দেওয়া ঠান্ডা লস্যি দেবে শুধু সোনা দোকান গুলো,ওখানেই আগে যাব।বাকি গুলো ত গেলেও হয়,না গেলেও বিশেষ ক্ষতি নেই।প্রচুর ভিড় ঠেলে,মিস্টির প্যাকেট আর গোল করে  পাকিয়ে গারডার লাগানো ক্যালেন্ডার দোমড়ানর হাত থেকে বাঁচিয়ে বাড়ি ফেরা কোন যুদ্ধ জয়ের থেকে কম ছিল না।

আর এখন,?
"শুনছ,সিক্সথ বালিগঞ্জ প্লেসে বুকিং টা আগে থেকেই করে দাও,এবারের মেনু তে ডাব-চিংড়ি টা দারুন জমে যাবে বুঝলে,ছোটপিসিরা  ওখানেই সোজা চলে আসবে নববর্ষ করতে।"

আমি শুনছি,আর ভাবছি।

শুভ নববর্ষ ১৪২০।