Sunday, May 18, 2014

আমি মেগা বানাতে চাই ...


খানিক টা "ম্যায় মাধুরী দিক্ষিত বননা চাহতি হু" টাইপ দাবি শোনালেও আমি সত্যি চাই, একটা মেগা বানাতে। একতা কাপুর আমার গুরু, স্বপন সাহা,অঞ্জন চৌধুরী আমার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক।পরিস্থিতির চাপে, যাহা সার্বজনীন তাহা অগ্রাহ্য করার দুঃসাহসের তাপে, বহুবার বাধ্য হয়েছি প্রচুর বাংলা-হিন্দি সিরিয়াল দেখতে।দেখে দেখে আমি জীবনের লক্ষ্য স্থির করে ফেলেছি ,যে মেগা বানাতেই হবে।

"এই ধানি লঙ্কা বউমার হাত থেকে, ওই সতীসাবিত্রী শাশুড়িকে বাঁচানো দরকার,কিউকি আব কি বার ..................।",এই রকম ডায়ালগ লিখতে পারছে কোথায় ! এনকে সলিল তার সাফল্যের দলিল কোথায় লুকিয়ে রেখেছেন,কেউ জানেনা।কিন্তু জানতে তো হবেই তাই না।একটা প্রোডিউসার পেলেই কাজ শুরু করে দি। গল্পের মূল উপাদান গোছানো আছে, তিনটে হিরো,  পাঁচটা হিরোইন , একটা মা, দুটো শাশুড়ি, তিনটে অথর্ব বাবা/ শ্বশুর , দু-তিনশ কিলো নতুন জামা-কাপড় আর কুইন্টাল খানেক মেকআপ।


এবার কি কি নতুনত্ব আনব সেটা বলি, প্রথমত বাকি মেগা দের মতই মূল গল্পের জন্য পাতি কোনও হিন্দি/তামিল/তেলে-# /ভোজপুরি মেগা থেকে কন্ট্রল সি তারপর ভি। আর বাকিটার জন্য পঞ্চাশ কিলো ঘড়ি ডিটারজেন্ট অরডার দিয়ে রেখেছি। প্রোডিউসার বলবে কি ঘড়ি ঢালব।সাপ্লায়র এর সঙ্গেও ট্যাগ লাইন এর চুক্তি,"পহলে ইস্তেমাল করেঙ্গে,টিয়ারপি বাড়েগা ত,ফির বিশ্বাস করকে পেমেন্ট করেগা"।সে ব্যাটারাও কনফি।আমার মেগায় মহা এপিসোড এর সাথে "মিনি উপদেশ "বলেও সেকশান থাকবে, সেখানে ভাবি শ্বশুর/শাশুড়ি/বউমা দের সফল সংসারের ত্রিফলা টিপস দেওয়া হবে।এটা নতুন আনব, কপিরাইট মেরে।সেখানে যত্ন সহকারে কোন মুখ-ঝামটা দেওয়ার পর কিভাবে ঠোট বাঁকাতে হবে ,কান্নার সময় কোন স্মাজ-ফ্রি কাজল টা বেশী দমদার,ছেলের পিঠ চাপড়ান,বউমা কে দাবড়ান গোছের বোনাস টিপস থাকবে।


আর যেসব শাড়ি গয়না পরে মেগা-মহিলারা সিরিয়ালে নিজের খাওয়ার ঘরেও সেজে গুজে ঘুরে বেড়ান, সদ্য ঘুম থেকে ওঠার দৃশ্যেও যেভাবে মাস্কারা লাগানো চোখে আগুন ঝরান সেগুলো কোন দোকান থেকে কেনেন সেটাও আমার মেগা তে দেখাব। একটা বাজার-বিপ্লব জাতীয়, অভূতপূর্ব মেগা পূর্ব ভারতে বানাতে চাই দাদা,শুধু একটা চান্স দেন।

সব কিছুই তো হল, কষ্ট কল্পনার সীমানা ছাড়িয়ে আর যাওয়া গেল না,
এত ভাট বকার পরও ,রিমোট হাতে সময়ের আগে এল না।





Thursday, May 15, 2014

ফলাফলের ছড়া




ঊঠিব কল্য কাঁচা প্রভাতে,
ধূমায়িত চা এর কাপ নিয়ে হাতে,
রিমোটে দিয়া নিয়ন্ত্রিত চাপ,
খবর গিলিব না ছাড়িয়া হাঁপ,
দেখিব কেমন চোখের সামনে নাটক রচিবে লাইভ,
বিজিত নামিয়ে মুখ দেখিবে বিজয়ীর হাই ফাইভ।
তারপর দিনভর শুধু তালি আর গালি,
কে কি ভেবেছিল,তার সে গুড়ে বালি,
সুজ্যি ডোবার কালে জানিতে পারিব কে গড়িতেছে সরকার,
......................................................

শেষ লাইন টা কি আরও লেখা দরকার ?

Sunday, April 27, 2014

পৈতে...দা মোস্ট উপকারী সুতো

এই যুগে এই বঙ্গে বামুন হয়ে জন্মে কি কি সুবিধা পেলুম তার একটা হিসেব নিকেশ করছিলাম ,ভোট গরম রোব্বারে চা এর সাথে আনন্দ চেবাতে চেবাতে। দেখলাম অসুবিধেটাই লম্বা লিস্টি হয়ে গেল, তাই সুবিধে খুজতে বসলাম।
পেয়েছি, সহজ, সরল লিস্ট। তার মধ্যে সবচেয়ে সরু জিনিস হল পৈতে।

প্রায় সতেরো বছর আগে আমার পৈতে হয়েছিল,মানে সাধারন মধ্যবিত্ত বামুন বাড়িতে যেভাবে হয় আর কি। শীতকাল, প্রায় ছয়-সাত বার স্নান করতে হয়েছিল, অনেক গিফট পাচ্ছিলাম,বেশ আনন্দ।তার মাঝেই বাজে খবর।নেড়া হতে হবে,তাও আবার একগাদা  লোকের মাঝখানে বসে,সবাই দাঁত ক্যালাবে,নাপিত আমাকে টাকলু বানাবে।অনেক কষ্টে  দাঁত চেপে গিয়ে বসলাম। অদ্ধেক কাটা হয়েছে এমন সময়,হঠাত ঘাড়ের পেছন দিক থেকে ছোটকাকুর গলা,"হ্যাঁ, দাদা ,খুরটা এক সেকেন্ড ধরে রাখুন,হ্যা ,ঠিক ওইভাবে,ব্যাস। খচাক!

সেই ছবি আজও বাড়িতে অ্যালবাম এ রাখা আছে। আজও ঘরোয়া আড্ডায় বসলে সেই প্রসঙ্গ ওঠে। সে দুর্দশার কথা থাক।আরও বড় হয়ে কলেজে পড়তে এসে বুঝলাম পৈতের উপকারিতা।হস্টেলে মশারি খাটিয়ে ঘুমতে হবে?দড়ি নেই? নো চিন্তা। প্রচন্ড গরম, পিঠ চুলকোতে হবে? পৈতে তোমার সবচেয়ে ভাল বন্ধু। নখ চিবিয়ে খেতে তো অনেক কে দেখেছেন,টেনশানে পৈতে চেবানেওয়ালা পাবলিক ও  দেখেছি।এক ফ্রাস্টু দাদার টালমাটাল অবস্থায় পৈতে ঝুলিয়ে সুইসাইডের হাস্যকর চেস্টা আজ ও কলেজের গল্পে লেজেন্ড হয়ে আছে।

ছয় সুতো নাকি নয়, কার ব্যাবহারে কি হয়, কোনদিন বুঝতে পারিনি, ঋগ্বেদ না যজুবেদ, কোনটাই ছুয়ে দেখিনি।গায়ত্রী মন্ত্র এত রিংটোন এ ব্যাবহার হয় যে ভুলতে পারিনি,আর সাবিত্রী মন্ত্র, হাহা ,তার কথা বাদ ই দিন।

বড় মা, মানে আমার ঠাকুমার মা তখনও জীবিত,পৈতে তে "গীতা" এক মাত্র তিনি ই  উপহার দিয়েছিলেন,হুকুম ছিল আর কেউ যেন না দেয়। নগদ এক হাজার টাকা ছাড়াও কয়েকটা লাইন লেখা ছিল যা কোনদিন জীবনে ব্যাবহার করিনি, কিন্তু মাথায় কোনও একটা কোণে ফেলে রেখে দিয়েছি,
" সুস্থ দেহ সুদ্ধ মতি, ভোগ সুখে নাহি রতি্‌, সদা ধর্মে মতি ,
 মানুষ দেবতা হও,শ্রেয়রে জানিতে চাও, হও মহামতি"।
 
আজও  হোলিতে রঙ খেলার পর পৈতে পাল্টানর সময় মাঝে মাঝে এইসব কথা মনে পড়ে যায়।